গত প্রায় ২৫ লক্ষ বছরে পৃথিবীতে পৌনঃপুনিকভাবে অনেকগুলো(২৩টি) হিমযুগ(বরফযুগ) আর উষ্ণযুগ সংঘঠিত হয়েছে।
গত প্রায় ১২ হাজার বছর ধরে বর্তমান উষ্ণযুগ চলছে। শেষ বরফযুগের সর্বোচ্চ বরফসীমা ছিল ১৮ হাজার বছর আগে। এরপর থেকে ওই বরযুগের বরফগুলো গলতে শুরু করে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকে। ওই সময় পৃথিবীর সমুদ্রতল কোথাও কোথাও বর্তমানের চেয়ে ১২৫ মিটার পর্যন্ত নিচে ছিল। অর্থাৎ, পৃথিবীর সমুদ্রপাড়ের যে স্থানটা এখন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২৫ মিটার নিচে, কোথাও কোথাও সেটা বাতাসে উন্মুক্ত ছিল।
এই ১২ হাজার বছর ধরে বরফ গলার মাত্রাটা এর আগের চেয়ে বেড়েছে এবং শিল্প বিপ্লবের পর আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে (এটাকে আমরা গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বলছি)।
এই যে ১২ হাজার বছর ধরে পৃথিবীর বরফ গলার মাত্রা বেড়ে গেল, এর ফলে সমুদ্রপাড়ের নিন্মভূমির সাগরে নিমজ্জিত হওয়ার মাত্রাও গেল বেড়ে। বিজ্ঞানীরা প্রমান পেয়েছেন যে, ৯ হাজার বছর আগেও বর্তমান ব্রিটেন ইউরোপের সাথে ‘ডগারল্যান্ড’ নামক এক অঞ্চল দ্বারা সংযুক্ত ছিল।
এই ‘ডগারল্যান্ড’ তখন ছিল উপত্যকা ও পাহাড়ের মিশ্রণে একটা অঞ্চল। এবং মধ্যপ্রস্তর যুগে সম্ভবত এখানে মানুষের বসবাস ছিল।
বছরের পর বছর ধরে জেলেদের জালে এখান থেকে প্রাচীন মানুষের ব্যবহার্য অনেককিছু উঠে এসেছে। বিজ্ঞানীরা এখানে ১৩ হাজার বছর আগে বেঁচে থাকা এক মানুষের দেহাবশেষ খুঁজে পেয়েছেন, খুঁজে পেয়েছেন একটি পশমি ম্যামথের মাথার খুলি এবং ৪০ হাজার বছর আগে বেঁচে থাকা এক নিয়ান্ডারথাল মানুষের মাথার খুলি।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যেহেতু ক্রমান্বয়ে বাড়ছিল, ৯ হাজার বছর আগে (৭,০০০ খৃষ্টপূর্বাব্দে) এই ‘ডগারল্যান্ড’ সম্পুর্ণরূপে সাগরের পানি দ্বারা ডুবে যায় এবং ইউরোপের মূল ভূখণ্ড হতে বর্তমান ব্রিটেন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।