‘আজ ঘন ঘন মাথা ঘামছে, মাথায় আগুনের আভার মতো করে উত্তাপ বেরোচ্ছে,…’
দুই লাইন লিখে ফারহান এর আর লিখতে ইচ্ছে করছে না। পরীক্ষার খাতায় না লিখেও তো উপায় নেই। আবার হাতে সময়ও বেশি নেই। ৩০ মিনিট সময়ের মধ্যে একটা গল্প লিখতে হবে এবং সে গল্পটা হতে হবে মৌলিক এবং অনর্থক গল্প লিখলে হবে না। গল্পের মাধ্যমে একটা বার্তা দিতে হবে যাতে করে এখান থেকে শিক্ষা নিতে পারে পাঠক।
ফারহান কেবলই ভাবছে কী লিখবে। প্রশ্নটা পড়ছে বারবার কিন্তু তার শব্দভাণ্ডার শূন্য আর মস্তিষ্কটাও দ্রুত সাড়া দিতে পারছে না। পরীক্ষার হলে পানি নিতে ভুলে গিয়েছে সে তাই পানিটাও খেতে পারছে না। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে নিলো সময় আর ১৫ মিনিট।
চারিদিকে সবাই লিখছে, সবাই ব্যস্ত। দুই লাইন যে সে লিখছে তা সে নিজেই পাঠ করে তব্দা খেয়ে যাচ্ছে। কারণ লাইন দুটোর কোনো অর্থই নেই।
ঘড়িতে আবার সময় দেখে নিলো ফারহান। আর ১০ মিনিট, তাহলেই শেষ হবে আজগুবি অর্থপূর্ণ গল্প লেখার। ফারহান আজগুবি গল্প ছাড়া আসলেই কিছু জানে না, ‘আজগুবি’ শব্দটা তার সবসময়ই বলা হয় যার জন্য সব্দটা মাথায় চট করেই এলো।
ফারহান এবার দ্রুতগতিতে পূর্বের দুটো লাইন আবার লিখলো অর্থাৎ পুনরাবৃত্তি করলো। ফারহানের গল্পটা নিম্নে তুলে দেয়া হলো …
৩ নং প্রশ্নের উত্তর :
‘আজগুবি শূন্য খাতার গল্প’
‘আজ ঘন ঘন মাথা ঘামছে, মাথায় আগুনের আভার মতো করে উত্তাপ বেরোচ্ছে…’
‘আজ ঘন ঘন মাথা ঘামছে, মাথায় আগুনের আভার মতো করে উত্তাপ বেরোচ্ছে…’
‘আজ ঘন ঘন মাথা ঘামছে, মাথায় আগুনের আভার মতো করে উত্তাপ বেরোচ্ছে…’
শূন্য খাতা ভর্তি করার জন্য প্রাণান্তরকর চেষ্টা করছে এক বালক কিন্তু তার মাথা হয়ে গেছে ফাঁকা— নেই তার চিনতা তাই সে করছে শূন্য খাতা পূর্ণ লিখে উদ্ভট গল্প। যেমন…।
নিহাননুল হকের মাথা খালি হয়ে গেছে সে গান গাইয়ে পরে সে পাগল হয়ে লিখলো উপরের তিন লাইন। হয়ে গেলো গান যার মূল্য অপরীসীম।
শিক্ষা :
আসলে যার মাথাতে বুদ্ধি নেই যেই বিষয়ে সেই বিষয়ে নিয়ে কাজ করা উচিৎ না তার। যেমন হলো এই উপরের তিন লাইন গান আর গল্প লেখক নিহানুল হক— সে আসলে গান লেখার মতো মানুষ নয়। মানে তার বুদ্ধি এদিকে নেই সে আসলে অন্য কোনো কাজ করতে ভালো পারবে।
তাই মূল শিক্ষা হলো?…..
সময় শেষ খাতা নিয়ে নিলো ফারহানের। গল্পটায় সম্ভবত অনেক বানান ভুল হয়ে গেছে। ভাষাগত ভুলও অনেক আছে— মানে সাবলীল হয়নি হয়তো। তবে ফারহানের গল্পটা হয়তো ভুলও হয়নি।
কেনো?
শিক্ষার্থীদের ভাবনাচিন্তা করে পড়াশোনা করা উচিৎ। সৃজনশীল হওয়া উচিৎ যার জন্য হয়তো এসব পদ্ধতি ভালোও। কিন্তু ফারহানের গল্পের নিহানুল হকের মতো অনেক মানুষ থাকবে যাদের আসলে গান লেখার মতো দক্ষতা নেই বা লিখলে সেরকম সুন্দর কিছু হবে না অর্থাৎ তার আনন্দের জায়গা হয়তো ভিন্ন। ফারহান নিজেও সেই গোত্রের মধ্যে পড়লেও পড়তে পারে। তাই এসব যুগোপযোগী সুন্দর পাঠ্যক্রমও অনেকের জন্য বোঝার উপযোগী হবে না, পরীক্ষায় ভালো করতে পারবে না। তাই বলে এই অভিনব প্রশ্ন পদ্ধতিকে মন্দ বললেও হবে না।
তবে সাথে যুক্ত থাকতে হবে আরো অনেক অভিনব বিষয় যাতে করে সবার জন্য একটা স্ট্যাডার্ড প্রশ্নকাঠামো দাঁড় করানো সম্ভবপর হয়।