বিগত এক মাস ধরে পুরো বাংলাদেশ জুড়ে প্রচণ্ড উত্তেজনা। খুন-খারাপি ছিনতাই প্রতারণার খবর চাপিয়ে পত্রিকার পাতায় পাতায় শুধু বাংলাদেশের প্রথম চন্দ্রাভিযানের খুঁটিনাটি ফলোআপ। খেয়াযান ‘সাম্পান’ এর মূল অংশের কাজ শেষ পর্যায়ে, অভিযাত্রীদের খেয়াকুটির বানানো হয়েছে পৃথকভাবে, মূল খেয়াযানের সাথে এ অংশটির সংযোগের কাজ শেষ হলেই শুরু করা যেতে পারে কাউন্ট ডাউন। কিন্তু সমস্যা বেঁধেছে ওখানেই, অনেক হিসেব-নিকেশ করেও সংযোগ বারের ওজন দেড় টনের চেয়ে কমানো যাচ্ছে না। অথচ আর মাত্র ছয়ত্রিশ কেজির বেশি ওজন বইবার ক্ষমতা সাম্পানের নেই। বিকল্প চিন্তায় কেউ মাথায় হাত দিয়ে বসে, কেউ করছে কম্পিউটারে খুটখাট, কেউ বা পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা আঁকিবুকি করে ভরিয়ে তুলছে ওয়েস্ট পেপার বক্স।
চিন্তামগ্ন হেড-ছুতার আব্দুল করিম মোল্লাও। কিন্তু সমস্যাটা কোথায় তাকে বলছে না কেউ। তাকে ছেড়ে দেওয়াও হচ্ছে না আবার কাজও করতে দেয়া হচ্ছে না, তবে ছুটি চাইলেই পাওয়া যাচ্ছে যখন তখন। ১১ মার্চ ছুটি নিয়ে কর্ণফুলি পাড়ি দিয়ে গ্রামে আসে করিম মোল্লা। ফেরার পথে খেয়াঘাটের চা-দোকানে আড্ডাবাজদের দশ রকমের আলোচনা শুনেই সে প্রথম জানতে পারে সাম্পানের কাজ শেষ করতে সমস্যাটা কোথায়। বুঝতে পেরে অবাক হয়ে ভাবে— আহা, তাকে জানালে কত আগেই কাজটা শেষ হয়ে যেত!
সরকারি ছুতার না করিম মোল্লা। তার কাজের সুনাম লোকের মুখে মুখে ফিরে বলেই না এই প্রকল্পে কাজ পেয়েছে সে। লোকে জানে মোল্লার কাজ যেমন নিখুঁত তেমন টেকসই। কেন টেকসই এই গোপন কথাটি কোনদিন সে কাউকে জানায়নি।
সবসময় মাস্টার গামের কৌটায় ভরে আঠা নিয়ে যায় বলে কেউ বুঝতে পারেনি তার ব্যবহৃত গাম বাজারচলতি গাম ভিন্ন অন্য কিছু। আইকার সাথে প্যারিস অব প্লাস্টার, আরবী গঁদ আর হোয়াইট সিমেন্ট মিশিয়ে সে তৈরী করেছে কঠিন এক প্রকার আঠা।
ঘুম না আসা চোখে, মোল্লা রাতভর ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তার গোপন সূত্রটি স্যারদের কাছে প্রকাশ করে দেবে কাল। শেষ রাতের দিকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও মোল্লার চোখ জুড়ে ঘুম নেমে আসে।
যখন ঘুম ভাঙে তখনও বাইরে আবছা অন্ধকার, তবুও মোল্লা নিজের কাছে লজ্জিত হয় দেরি হয়ে গেল বলে। কোনমতে চোখে মুখে পানির ছিটা দিয়ে কাঠের হাতলের ছাতাটা বগলে নিয়ে হাওয়ায় ভেসে ভেসে রওনা হয় বেস ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে। রাতে একটু সময়ের ঘুমের মধ্যেও স্বপ্নে দেখেছে তার কৌশলটা প্রকাশ করার পর পুরো বেসক্যাম্প জুড়ে বয়ে যাচ্ছে খুশির বন্যা, আর্মি অফিসার আর বিজ্ঞানীরা আবাহনী-মোহামেডানের খেলার গোলদাতার মতো করে মাথার উপরে তুলে দোলাচ্ছে তাকে, লজ্জায় কাচুমাচু হয়ে যাচ্ছে তার চোখমুখ। শেষ দিকে সবাই মিলে তাকে শূন্যে ছুঁড়ে দিতেই না আছড়ে পড়ার ভয়ে কাঁপুনি দিয়ে ঘুম ভেঙে গেল!
পতেঙ্গার বেস ক্যাম্পে পৌঁছে তার কার্ড দেখিয়ে ভেতরে ঢুকে তাড়াতাড়ি। ঢুকেই তার হাঁটার গতি কমে যায় হঠাৎ। ভাবে, কার কাছে রাখা যায় প্রস্তাবটা। এদিক ওদিক খুঁজতে থাকে নির্ভরযোগ্য একটি মুখ, দেখতে পায় মেজর মঈন হেঁটে আসছেন এদিকেই। কাছে আসতেই মোল্লা বিনয়ের সাথে সালাম দিয়ে বলতে থাকে— ‘ছার একখান কথা আছিল ছার।’
মেজর মঈন তাঁর স্বভাবসুলভ হাসি ধরে রেখেই বলেন— ‘হ্যাঁ, বলো কী করতে পারি?’
কথা বললেও তাঁর দ্রুত হাঁটার গতি কমে না। মোল্লাকে দৌঁড়াতেই হচ্ছে মেজরের সাথে তাল মেলাতে। কোন রকমে বলে— ‘ছার, একটা গাম ছার…’
মেজর ভাবতেই পারেননি মোল্লা তার কাছে গাম চাইতে পারে, একটু থমকে বললেন— ‘গাম!’ বলেই আবার হাঁটতে শুরু করেন তিনি।
‘জ্বি ছার, রকেটের কামে…।’ মেজরের মুখে বিরক্তির রেখা ফুটে উঠতে দেখে থেমে যায় মোল্লা।
গেট পেরিয়ে গাড়িতে উঠে বসতে বসতে মেজর বলেন— ‘তা আমার কাছে কেন? স্টোরে যাও।’
কিছুটা দমে যায় মোল্লা। ক্যাম্পের সব আর্মি অফিসারদের চেহারা রাগি রাগি, কথা বলতেই ভয় করে। এই মেজর মঈনই শুধু ব্যতিক্রম, কাজের ফাঁকে অবসর পেলে ছুতার শ্রমিকদের কাছে এসে গল্প জুড়ে দেন, ঘর সংসারের খবরাখবর নেন। তাঁর কাছেই যখন বলা গেল না…
‘কি হে হেড ছুতার, ব্যস্ততা কীসের এত?’ বিজ্ঞানী এলবার্ট গোমেজের গলা শুনে চকিতে ঘুরে দাঁড়ায় মোল্লা। এই তো, বলার মত নির্ভরযোগ্য আর একজন পাওয়া গেছে! এবার সুন্দর করে গুছিয়ে বলতে হবে— মনে মনে ভাবে মোল্লা। সালাম দিয়ে বলতে থাকে— ‘ছার খুব জরুলি একখান কথা আছে ছার, একটু যদি খাড়ান।’
‘ঠিক আছে বল।’ বুকে হাতজোড়া বেঁধে দাঁড়ান বিজ্ঞানী।
‘ছার, এই যে ধরেন আপনেরা এঙ্গলের সমইস্যায় আছেন ছার, সামাইন্য চেষ্টা করলে এইটার সহজ ব্যবস্থা হয় ছার’… গোমেজ স্যারের মুখ থেকে বিস্ময় মাখানো “কীভাবে!” শব্দটি শোনার আশায় একটু বিরতি নেয় মোল্লা।
‘ওহ্, এই কথা? সমাধান হয়ে যাবে, এ’নিয়ে তুমি ভাববে না। সাম্পান ঠিক ২৫ মার্চেই রওনা দেবে আর চাঁদে নামবে ২৬ মার্চ, ঠিক আমাদের স্বাধীনতা দিবসে’। গর্বিত বিজ্ঞানী গট গট হেঁটে দ্রুত প্রবেশ করেন কম্পউটার ল্যাবে।
মোল্লার ডাক পড়ে বিগ্রেডিয়ার শাফায়াত কবিরের অফিস কক্ষে। চন্দ্রাভিযান আয়োজনের সম্পূর্ণ দায়িত্ব আর্মির হাতে ন্যাস্ত, বেসক্যাম্পের সব আদেশ নির্দেশ তাদের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়। বিগ্রেডিয়ার নিজেই তাকে আদেশ দেন লোকজন নিয়ে খেয়াযানের সাথে খেয়াকুটিরের সংযোগ কাজ আরম্ভ করার। বিগ্রেডিয়ার সাহেব বেশ অমায়িক আর ধৈর্যশীল লোক। যদিও তাঁর কাছে পৌঁছানো সহজ নয়, এই মুহূর্তে সে সুযোগটি পেয়ে শেষ চেষ্টা হিসেবে মোল্লা মরিয়া হয়ে বললো— ‘ছার, আপনের অডার মত একঘর একঘর বাদে এঙ্গল লাগাব, কথা হইচ্ছে ছার, আমার বানাইন্যা গাম লাগাইলে তিনঘর তিনঘর বাদে এঙ্গল লাগাইলে কোন অসুবিধা নাই ছার।’
ধৈর্যশীল বিগ্রেডিয়ার কিছুটা অবাক হলেও মোল্লার আত্মবিশ্বাসের জোর দেখে মন দিয়ে শুনলেন সব কথা। নিজের অবিশ্বাস চেপে রেখেই বললেন— ‘ঠিক আছে, কাল নিয়ে এসো তোমার গাম, পরীক্ষা করে দেখব। এখন গিয়ে কাজ শুরু করে দাও।’
বিগ্রেডিয়ার অবিশ্বাস চেপে রাখতে চাইলেও তাঁর কণ্ঠের পরিবর্তন মোল্লার কান এড়ায়নি, বিষয়টি তার ইগোতে লেগেছে বেশ। পরদিন কাজে যাওয়ার সময় গামতো সঙ্গে নিলোই, সাথে নিলো প্রায় ছয় বছর আগে বানানো একটা কাঠের পিঁড়িও। বিগ্রেডিয়ার সাহেবের সামনে পিঁড়িটা রেখে বললো— ‘ছার, এইটারে রোলারের তলায় রাইখ্যা ডলা দিয়া দেখেন ছার, প্রমাণ পাইবেন হাতেনাতে।’
ইংগিত পেয়ে মেজর ইমরান মোল্লাকে নিয়ে রওনা হলেন এয়ার ফিল্ডের দিকে।
বিকেলে অস্বাভাবিক উত্তেজনা জাগলো পুরো বেসক্যাম্প জুড়ে। ল্যাবোরেটরিতে গাম পরীক্ষা হয়েছে, এয়ারফিল্ডেও পিঁড়ির উপরে গেছে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা। দুটোতেই মোল্লা পাস। স্বপ্নে দেখা দৃশ্যের মতো করে মোল্লাকে কেউ মাথায় নিয়ে নাচলো না বটে, প্রশংসার ফুলঝুড়িতে বেচারা লাল হলো বেশ কয়েকবার।
২৩ মার্চ সম্পন্ন হয়ে গেল সব কাজ। ২৪ তারিখ টুকিটাকি গ্রাউন্ড টেস্ট শেষে বিগ্রেডিয়ার জানালেন ২৫ তারিখ বিকেল একটা ত্রিশ মিনিটে ‘সাম্পান’ রওনা দেবে চাঁদের পথে, কক্ষপথে পৌঁছলেই সংশ্লিস্ট সবাইকে গার্ড অব অনার দেবে সেনাবাহিনী। বলে সবার সাথে করমর্দন করে অফিস কক্ষে চলে গেলেন তিনি। হেড-ছুতার করিম মোল্লা বুঝে পেয়েছে তার সব পাওনা, সাথে মোটা বকশিস। আজ আর ছুটি নয়; প্রকল্প থেকে বিদায়। যদিও আনুষ্ঠানিক বিদায় হবে কাল।
মোল্লা খুশি মনে বাড়িতে পৌঁছে স্ত্রীর হাতে টাকা তুলে দিয়ে আড্ডা দিতে চলে যায় চা দোকানে। পত্রিকায় তাকে নিয়ে বেশ লিখালিখি হয়েছে। এলাকাবাসীর প্রতিক্রিয়া নিজের কানে শোনার লোভটাও তাকে দ্রুত টেনে নিয়ে যায় আড্ডায়। আড্ডার এক পর্যায়ে পাড়ার এক ভাতিজা বাচ্চুকে একপাশে ডেকে মোল্লা জানতে চায় ‘গাডঅ-বনার’ কী জিনিস? বাচ্চু ছেলেটা বাচাল হলেও শিক্ষিত আর চটপটে। দেশ দুনিয়ার অনেক খবর থাকে তার পেটে।
মোল্লার প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে বাচ্চু অবাক হওয়ার ভান করে বললো— ‘কেন চাচা! হঠাৎ গার্ড অব অনার কেন? তোমাকে রকেট মন্ত্রী বানাবে না কি!’
লজ্জা পেয়ে মোল্লা বললো— ‘আরে ধুর, মিস্তরি আছি হেই ভালা, মন্ত্রী হইয়া কী আর হইব? বিগ্রেডিয়ার সাব কইলো কাইল গাডঅ-বনার দিব, তার লাগি জানতে চাইলাম।’
‘তাই ব লো চা চা। তোমাকেও দেবে নাকি!’ সন্দেহ আর কৌতুক মিশ্রিত বাচ্চুর কণ্ঠে।
‘কি জানি বাপ, কইলত কাইল আনতে যাইতে।’ কাচুমাচু হয়ে বলে মোল্লা।
হাসতে হাসতে বাচ্চু বললো— ‘চাচা, এটা আনার জিনিস না! এটা হলো বিশেষ ধরণের সালাম, তবে সালামটা দেয়ার আগে একটা লাথি মারা হবে।’ বলে মাটিতে পা ঠুকে বাচ্চু।
‘কও কী? এইটা কোন কিসিমের বেয়াক্কইল্লা সালাম! এত্ত জোরে লাথি মারব?’ মোল্লা বুঝতে পারে না বাচ্চু ঠিক বলছে কি না।
‘কোন ভয় নেই চাচা, গায়ে লাগবে না। তা’ছাড়া এটা হলো রাষ্ট্রিয় সম্মান, এটা পেতে হলে সাত-পুরুষের ভাগ্য লাগে বুঝলেন!’
‘ধুর ভাতিজা; বিটলামি রাখ। লাথি দিয়া কী কচুর-মাথার সরমান?’
‘বৃটিশের নিয়ম চাচা, কিচ্ছু করার নাই। একবার তুমি গার্ড অব অনার পেলে এই এলাকার কেউ তোমাকে সালাম না দিয়ে কথা বলতে পারবে না! এই নাও আমি আগেই দিয়ে নিই।’ পা ঠুকে সালাম দিয়ে হাসতে হাসতে চলে যায় বাচ্চু। লজ্জায় আর কারও কাছে গার্ড অব অনার নিয়ে কথা তোলেনি মোল্লা।
পরদিন খেয়ে দেয়ে ১২ টার দিকে বেস ক্যাম্পের গেটে পৌঁছে যায় মোল্লা। পরনে নতুন লুঙ্গি, বগলে নতুন ছাতা। গেটে এতোদিন পুলিশ ছিলো। আজ দেখলো র্যাব আর আর্মিতে ঠাসা। পরিচিত পুলিশদের না দেখে ধীরে ধীরে এগুতে থাকে হেড-ছুতার। তার অধীনে প্রায় দেড়মাস ধরে বিনা বাক্য ব্যয়ে কাজ করে গেছে যে সব নাক উঁচু সরকারি ছুতাররা, তাদের কাউকেও আশেপাশে দেখা যাচ্ছে না। একজন র্যাব সদস্যকে বিশেষভাবে তাকাতে দেখে একটু থামে মোল্লা। আবার এগুতেই হাঁক পড়ে— ‘এই যে চাচা মিয়া? সরেন, পথ ছাড়েন জলদি।’
‘ছার; আমি হইলাম হেড…’
কথা শেষ না হতেই ধমক দেয় র্যাব সদস্য— ‘যান মিয়া, যান। ভালোভাবে বললে কানে যায় না, না?’
‘এই যে ছার; কাড-ছার, আমি ছার সাম্পান…’ পকেটে কার্ড হাতড়ায় মোল্লা।
হঠাৎ ব্যস্ত হয়ে ওঠে র্যাব-আর্মি, হুইসেল বাজিয়ে র্যাব সদস্যরা ধাক্কা দিয়ে সরাতে থাকে উৎসুক জনতাকে। র্যাব সদস্যকে তখনো মোল্লা নিজের পরিচয় বোঝাবার চেষ্টা করছে, আর্মির এক সিপাহী এসে হঠাৎ কষে লাথি ছুঁড়ে মোল্লার গায়ে। হুমড়ি খেয়ে পড়ে পাশের লাইট পোস্টে মাথা ঠুকে যায় হেড-ছুতারের। পাশ দিয়ে তীব্র গতিতে ভেতরে ঢুকে যায় কোন এক মন্ত্রীর গাড়িবহর। গাড়িবহর না দেখলেও ঝাপসা চোখে মোল্লা দেখতে পায় র্যাব আর আর্মিরা সবাই বিশেষ ভঙ্গিতে সালাম ঠুকছে। মাথার যন্ত্রণা অনুভব করতে পারে না সে; অনুভব করে প্রচণ্ড দুর্বলতা। তবুও গার্ড অব অনারের জবাব দিতে ধীরে ধীরে হাত তুলে। বাচ্চু তাকে ওভাবেই শিখিয়ে দিয়েছিলো। কপাল পর্যন্ত হাত পৌঁছানোর আগেই জ্ঞান হারায় মোল্লা।
২৬ মার্চ বিকেল পর্যন্ত মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে মোল্লা হাসপাতারের সফেদ বেডে শুয়ে। হঠাৎ হাসপাতালের স্বাভাবিক শান্ত পরিবেশের বিঘ্ন ঘটিয়ে প্রচণ্ড হর্ষধ্বনি উঠে কড়িডোর জুড়ে। অল্প কিছুক্ষণের জন্য জ্ঞান ফিরে প্রাক্তন হেড ছুতারের। কপালে হাত ঠেকিয়ে শেষ বারের মতো গার্ড অব অনারের অসম্পূর্ণ জবাবটা শেষ করতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় আব্দুল করিম মোল্লা।
ডাক্তার, নার্স, ওর্য়াড বয়, আয়া সবাই তখন রোগী ফেলে অভিভূত হয়ে টিভি’র পর্দায় দেখছে চাঁদে নামছে লাল-সবুজ পতাকা আঁকা বাংলাদেশের প্রথম খেয়াযান— ‘সাম্পান’।