২৫৬ সাধারণাব্দে রোমান সম্রাট ভেলেরিয়ানকে হারিয়ে রোমান শহর অ্যান্টিওক জয় করার পর, সাসানিয়ান রাজাদের রাজা (শাহানশাহ) শাপুর ১, বিখ্যাত সুসা ও শুশতার শহরের মধ্যবর্তী স্থানে গুন্ডেশাপুর (Gundeshapur) শহরটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং এটিকে তার শীতকালীন রাজধানীর মর্যাদা দেন।
তিনি এরপর রোমান সম্রাট ওরেলিয়ানের একমাত্র কন্যাকে বিবাহ করেন এবং সেই কন্যার মাধ্যমে কিছু গ্রীক ডাক্তার এসে এই শহরে শিক্ষা দান ও হাসপাতাল শুরু করেন। তার আগে এই জায়গার নাম ছিল, Weh-Andiōk-Šābuhr.
জ্ঞান চর্চা কখনো থেমে থাকে না, তাই ৪৮৯ সাধারণাব্দে বাইজেন্টাইন সম্রাট জেনোর আদেশে নেস্টোরিয়ান theological and scientific center in Edessa-তে জ্ঞান চর্চা বন্ধ করে দেয়া হলে সেটি এখানে চলে আসে এবং এর নাম হয় The School of Nisibis or Nisibīn.
এরপর ৫২৯ সাধারণাব্দে রোমান সম্রাট জাস্টিনিয়ানের হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে প্রচুর গ্রীক, রোমান ও রোমান সাম্রাজ্যের অধীনের বুদ্ধিজীবীরা (খ্রিস্টান হতে অস্বীকার করা) পালিয়ে এখানে আশ্রয় গ্রহণ করেন। এরপরের ৪০ বছর খসরু ১-এর সময় গ্রীক ও সিরিয়াক ভাষা থেকে বইপুস্তক পাহলাভী ভাষায় অনূদিত হয়। এমনকি এই সময় এখানে চিনা ও ভারতীয় বিভিন্ন শাস্ত্রের বই ও একইভাবে অনূদিত হয়।
মুসলমানদের হাতে ৬৫১ সাধারণাব্দে সাসানিয়ার সাম্রাজ্যের পতন হলেও এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়টি কিন্তু থেকে যায়। এরপরে ৮৩২ সাধারণাব্দে, ৭ম আব্বাসীয় খলিফা আবু জাফর আবদুল্লাহ আল মামুন ইবনে হারুন বাগদাদে (Bagdad) বায়ত আল-হিকমা (জ্ঞানের ঘর) প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে গুন্ডেশাপুরের পদ্ধতিগুলি ওখানকার একাডেমির স্নাতকদের দিয়েই শুরু করা হয় (House of Wisdom) বায়াত আল হিকমায়। অর্থাৎ গুন্ডেশাপুর বিশ্ববিদ্যালয় বায়াত আল হিকমার পূর্বসূরী।
কথিত আছে যে হযরত আলী (রাঃ)-কে এই গুন্ডেশাপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল যা তিনি সময়াভাবে অপারগতা প্রকাশ করেন।
প্রচ্ছদ চিত্রে : গুন্ডেশাপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভগ্নাংশ।