অনুসর্গ তো আমরা শিখেছি। অনুসর্গ যে বিভক্তির অভাব মেটাচ্ছে তাও জেনেছি। উপসর্গও কি তাই? – বুতানের স্কুলে বোধ হয় এখন উপসর্গ শেখান হচ্ছে।
– না। অনুসর্গ অব্যয় হতে পারে আবার ক্রিয়াজাত হতে পারে, একথা তোদের আগে বলেছি। তবে মনে রাখবি যে উপসর্গ কিন্তু সবসময়ই অব্যয়। অনুসর্গ সাধারণত শব্দের পরে বসে আর উপসর্গ বসবে শব্দের আগে। অনুসর্গ আলাদাভাবে ব্যবহার করা গেলেও শুধু ‘অতি’ আর ‘প্রতি’ এই দুটো উপসর্গ ছাড়া অন্যগুলি আলাদা ব্যবহার করা যায় না। আর সবচেয়ে বড় তফাত হল অনুসর্গ শব্দ বিভক্তির কাজ করে আর উপসর্গের কাজ কিন্তু আলাদা। উপসর্গ যেমন শব্দকে ব্যাখ্যা করে তেমনি অনেক সময়ই শব্দের আসল মানেটাই বদলে দেয়।
– তার মানে উপসর্গগুলো কি শুধু তৎসম শব্দেই ব্যবহার করা যাবে? – বুতানের প্রশ্ন।
– না। সংস্কৃত উপসর্গ যেমন আছে তেমনি আছে বাংলা উপসর্গ আর বিদেশী উপসর্গ।
– বুঝলাম। সংস্কৃত উপসর্গ শুধু তৎসম শব্দেই ব্যবহার করা যাবে। সংস্কৃত উপসর্গ কোনগুলো দাদু? – মান্তু জানতে চায়।
– প্র, পরা, অপ, সম্, নি, অব, অনু, নির্ (নিঃ), দুর (দুঃ), বি, অধি, সু, উদ্ (উৎ), পরি, প্রতি, অভি, অতি, অপি, উপ, আ এই কুড়িটা হল সংস্কৃত উপসর্গ।
– এগুলো এলে শব্দের মানে বদলে যাবে?
– না, সবসময় যে মানে বদলাবে তা নয়। অনেক সময় শব্দটাকে আরও ভালভাবে ব্যাখ্যাও করে। তোদের একটা উদাহরণ দিই। জয় শব্দের আগে ‘বি’ উপসর্গ লাগালে জয় শব্দের মানে তো একই থাকছে। কিন্তু ‘পরা’ উপসর্গটা লাগিয়ে দেখ। জয় তো রইলোই না বরং এর উল্টো মানে তৈরি হয়ে গেল অর্থাৎ পরাজয় মানে হার। আবার দুঃ+জি (ধাতু) +অ = দুর্জয় মানে অদম্য অর্থাৎ হারে না। আবার দেখ, হার মানে পরাজয় হলেও আ+হার মানে খাওয়া, বি+হার মানে বেড়ানো, প্র+হার মানে মারা, উপ+হার মানে ভেট, প্রতি+হার মানে দ্বাররক্ষী, উদ্+হার = উদ্ধার মানে পরিত্রাণ। আবার উপ+আহার = উপাহার মানে কিন্তু সামান্য খাওয়া। আর মজার ব্যাপার হল এই সবগুলো শব্দই কিন্তু ‘হৃ’ ধাতু থেকেই তৈরি হচ্ছে। আবার একই উপসর্গ কিন্তু বিভিন্ন শব্দের আগে বসে একেক রকম মানে বোঝাচ্ছে।
– ঠিক বুঝতে পারলাম না। দু একটা উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও। – মান্তু পরিষ্কার করে বুঝতে চাইছে।
– আচ্ছা, ‘পরা’ একটা উপসর্গ। এখন যদি বলি পরাক্রম তবে মানে হবে অতি বীরত্ব। কিন্তু পরাজয় মানে জয়ের উল্টো। আবার পরামর্শ মানে সম্যক যুক্তি।
-আর বাংলা উপসর্গ কোনগুলো, দাদু? – মান্তু জিজ্ঞাসা করে।
– অ, আ, অনা এই বাংলা উপসর্গগুলো নেই অর্থে ব্যবহার হয়।
– বুতান তুই কয়েকটা উদাহরণ দিতে পারবি?
– অজানা, অকেজো, অফুরন্ত, আধোয়া, আলুনি, অনাবৃষ্টি, অনাহার …. বুতান বলে যায়।
– দাঁড়া, দাঁড়া, অন্যগুলো ঠিক হলেও ‘অনাহার’ শব্দটা ঠিক হল না।
– কেন দাদু, ‘অনাহার’ শব্দটা কি ভুল? – মান্তুর জিজ্ঞাসা।
– ‘অনাহার’ শব্দটা ঠিকই আছে তবে এটা অ, আ, বা অনা উপসর্গের উদাহরণ নয়। এই শব্দটা তৈরি হয়েছে সংস্কৃত ‘অন্’ উপসর্গ দিয়ে। অন্+আহার = অনাহার। বাংলা উপসর্গের মধ্যে আরও আছে ‘কু’, যেমন কুকাজ, কুকথা, কুকীর্তি, ইত্যাদি। আবার’ কু’ যেমন খারাপ অর্থে তেমনি ভাল অর্থে ‘সু’ উপসর্গ ব্যবহার করা যায়। যেমন, সুনজর, সুঠাম, ইত্যাদি।আরও বাংলা উপসর্গ আছে যেমন, ‘নি’ (নির্), ‘না’, ‘বি’, ‘পাতি’,” ‘ভর’, ‘ভরা’, ‘হা’, ‘স’।
-এগুলোর কয়েকটা উদাহরণ দাও না। – মান্তু বলে।
– কেন নিজেরা খুঁজে বের করতে পারছিস না? ঠিক আছে, আমি একটা দুটো বলে দিচ্ছি। তোরা নিজেরা ভেবে আরও উদাহরণ খাতায় লিখে রাখিস। যেমন, নিখোঁজ, নির্ভেজাল, নাছোড়, নাবালক, বিভুঁই, বিজোড়, পাতিকাক, পাতিলেবু, ভরপেট, ভরসন্ধে, ভরাডুবি, ভরানদী, হাঘরে, হা-পিত্যেশ, সজোর, সডাক, ইত্যাদি।
আর আছে বেশ কিছু বিদেশী উপসর্গ। যেমন ‘গর’, গরহাজির, গরমিল। ‘বদ’ বদনাম, ‘ফি’ ফি-সন, ‘দর’ দরকচা, ‘বে’ বেঅকুফ, ‘নিম’ নিমরাজি, ‘হর’ হরদিন, ‘হেড’ হেড পণ্ডিত, এই রকম আরও অনেক উপসর্গ আছে।


Bigwin69login… I’m all about the big wins! Logged in, played some, and it was a decent experience. Give it a shot and see if you can snag a big one: bigwin69login
mm66win caught my eye! The graphics are nice. I’m giving it a try and see if I can actually *win*. It looks promising. What about you? Give it a go: mm66win