এটিএম শামসুজ্জামান কেবল একটি নামই নয়। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের এক দুর্দান্ত ইতিহাস।
এটিএম শামসুজ্জামান ছিলেন একাধারে একজন অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা, পরিচালক, কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপকার ও গল্পকার।
অভিনয়ের জন্য পাঁচ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন প্রবীণ এই অভিনেতা। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক। তাঁর পুরো নাম আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান।
জন্ম ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে মাতুলালয়ে।
গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায় হলেও তিনি বেড়ে উঠেছেন ঢাকার দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে।
পড়াশোনা করেছেন ঢাকার পগোজ স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল, রাজশাহীর লোকনাথ হাই স্কুলে। পগোজ স্কুলে তাঁর সহপাঠী ও বন্ধু ছিলেন আরেক জাঁদরেল অভিনেতা প্রবীর মিত্র।
ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট হাই স্কুল থেকে। তারপর জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন।
তাঁর বাবা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল। এছাড়াও তিনি শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। মাতা নুরুন্নেসা বেগম। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামসুজ্জামান ছিলেন সবার বড়।
১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধূরীর ‘বিষকন্যা’ চলচ্চিত্রের সহকারি পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্র জীবনের শুরু করেন শামসুজ্জামান।
এছাড়া খান আতাউর রহমান, কাজী জহির, সুভাষ দত্তদের সহকারি পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন।
এরপর ২০০৯ সালে প্রথম পরিচালনা করেন শাবনূর-রিয়াজ অভিনীত ‘এবাদত’ নামের ছবিটি। প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের জন্য। এ ছবির মাধ্যমে অভিনেতা ফারুকের চলচ্চিত্রে অভিষেক। এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনী লিখেছেন।
অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র পর্দায় শামসুজ্জামানের আগমন ১৯৬৫ সালের দিকে। তবে প্রথম দিকে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেছেন তিনি।
১৯৭৬ সালে আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন তিনি।
১৯৮৭ সালে কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দায়ী কে’ চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’তে অভিনয় করেন ও শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে প্রয়াত হন বাংলা চলচ্চিত্রের দুর্দান্ত এই অভিনেতা। শ্রদ্ধাঞ্জলি।
লেখক— আশরাফুল আলম