নারদ মুনি

» নারদ মুনির সংগীত চর্চা

গাল্পিক :

একদিন দেবর্ষি নারদ গেলেন বিষ্ণুলোকে। সঙ্গে রয়েছেন আরও মুনি ঋষি দেবতা। কিছুক্ষণ পর সেখানে এলেন বিষ্ণুপত্নী লক্ষ্মীদেবী। লক্ষ্মী আসতেই বিষ্ণু গন্ধর্বগুরু তুম্বুরুকে সংগীতের জন্য আজ্ঞা দিলেন।

গান ধরলেন তুম্বুরু। গানের সঙ্গে যেন চারিদিকে মধু ঝরতে লাগল। নারদ গান শুনে বিভোর হয়ে গেলেন। লক্ষ্মী আর নারায়ণ দুজনেই তুম্বুরুর গানের অনেক প্রশংসা করলেন। নারায়ণ নিজের হাতে তুম্বুরু গলায় মালা দিয়ে তাকে দেবদুর্লভ সম্মানে সম্মানিত করলেন।

নারদও গান জানেন। নারায়ণের নামগান ছাড়া তিনি আর কিছু জানেন না। কই, নারায়ণ তো কোনোদিন সবার সামনে নারদকে তুম্বুরুর মত সম্মান দেখাননি। বোধ হয় তার গান বুঝি এখনো ততটা ভাল হয় না। ভেবে খুব কষ্ট পান নারদ।

তুম্বুরুর মত গায়ক হওয়ার জন্য তপস্যায় বসলেন নারদ। তপস্যা করতে করতে একদিন দৈববাণী হল নারদ যেন মানস সরোবরের উত্তর পর্বতে গানবন্ধু নামে পরিচিত উলূক পাখির কাছে সংগীত শিক্ষা নেন।

অমনি নারদ সেখানে গানবন্ধুর কাছে শিষ্যত্ব গ্রহণ করে সংগীতের পাঠ শুরু করলেন। সেখানে তিনি এক হাজার বছর গান শিখলেন। এরপর উলূক বললেন যে গানের সবকিছুই তিনি নারদকে শিখিয়েছেন। নারদের পাঠ সম্পূর্ণ।

খুশিমনে নারদ তখনি নারায়ণের কাছে গেলেন গান শোনাতে। প্রভু গান শুনে বললেন নারদ, তুমি অনেক গান শিখলেও এখনও তুম্বুরুর মত গাইতে পারোনি। তোমাকে আরও শিখতে হবে।

সেই থেকে নারদ বীণা হাতে নিয়ে অষ্টপ্রহর গান চর্চা করে চলেছেন। কত কাল কত যুগ কেটে গেল। দ্বাপর যুগে নারায়ণ কৃষ্ণ হয়ে পৃথিবীতে জন্ম নেন। কৃষ্ণরূপী নারায়ণকে দেখে নারদ আবার তাকে গান শোনাতে এলেন।

কৃষ্ণ নারদকে সত্যভামার কাছে গান শিখতে পাঠালেন। সত্যভামার কাছে গান শিখে নারদ আবার এলেন কৃষ্ণের কাছে।

এবার নারদের গান শুনে কৃষ্ণ তাকে পাঠালেন রুক্মিণীর কাছে। রুক্মিণীর কাছেও কিছুদিন গান শিখলেন নারদ। আবার এলেন কৃষ্ণের কাছে।

এবার কৃষ্ণ নিজেই নারদের গানের ত্রুটিগুলো শোধন করে দিলেন। আবার গান ধরলেন নারদ। কৃষ্ণ গান শুনে বললেন নারদ, এতদিনে তুমি যথার্থ গান গেয়েছ।

বহুকাল পরে প্রভুর কাছে তুম্বুরুর মত প্রশংসা শুনে সন্তুষ্ট হলেন নারদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *