ওগো বৃষ্টি আমার চোখের পাতা ছুঁয়ো না;
কিংবা আমার বলার কিছু ছিল না— এসব কালজয়ী গানের অন্যতম কণ্ঠশিল্পী হৈমন্তী শুক্লা।
উপমহাদেশের আধুনিক বাংলা গানের কিংবদন্তী শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা। তিনি বাংলা, হিন্দি, মারাঠিসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় গান পরিবেশন করে শ্রোতা দর্শক হৃদয়ে সমাদৃত হয়েছেন।
হৈমন্তী শুক্লা একজন সুকন্ঠি বাঙালি গায়িকা।তার পরিবার বরাবরই হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের ঐতিহ্যের অনুসারী এবং এটিই তাকে একজন ক্লাসিকালি প্রশিক্ষিতা কণ্ঠশিল্পী হিসেবে পরিণত হতে সাহায্য করেছিল।১৯৭২ সালে তার প্রথম রেকর্ড করা গানটি ছিল এতো কান্না নয় আমার।
হৈমন্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতা শহরে সুবিখ্যাত হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় কণ্ঠসংগীতশিল্পী পণ্ডিত হরিহর শুক্লার গৃহে ২রা ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তাই তিনি শৈশবকাল থেকে তার বাবার কাছ থেকেই সংগীতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হন।
২১ বছর বয়সে ১৯৭০ সালে শৈলেন মুখোপাধ্যায়ের সুরে একটি ছড়া গান রেকর্ড করে ভূয়সী প্রশংসা লাভ করেন ।২৩ বছর বয়সে ১৯৭২ সালে শৈলেন মুখোপাধ্যায়ের সুরে পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়এর লেখা ‘এতো কান্না নয় আমার’ শিরোনামে একটি পূজার গান রেকর্ড করেন।
হৈমন্তী শুক্লা ১৯৮৬-৮৭ এ পণ্ডিত রবিশঙ্করএর সুরে বাংলা গান করেন। বলিউডের চলচ্চিত্রে তার গাওয়া একটি জনপ্রিয় গান হল ” কঁহা সে আয়া বদরা”। যা এক দর্শকদের মুখে মুখে শোনা যেতো।
সংগীত গুরু বাবার কাছেই উচ্চাঙ্গ, ক্লাসিকাল, রাগপ্রধান সহ নানাপ্রকার সঙ্গীত শিক্ষা শুরু করেন। তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি আধুনিক বাংলা গান পরিবেশন করে আজ পর্যন্ত যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন এবং বাংলা গানের যে শ্রোতা তৈরি করেছেন তা তুলনাহীন।
অসংখ্য চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাকে কণ্ঠ দেন সঙ্গীত শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা । বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠান ছাড়াও মঞ্চ অনুষ্ঠান করেন। সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল এই শিল্পী ‘ও গো বৃষ্টি আমার’, ‘আমার বলার কিছু ছিল না’, ‘ও গো স্বপ্ন তুমি চলে যেও না’— এ রকম হাজার জনপ্রিয় গানের অধিকারী এই শিল্পী ।
বাবা প্রখ্যাত শিল্পী শ্রী হরিহর শুক্লা, মা শ্রীমতি সমত্ত শুক্লা। গুণী এই শিল্পীর সঙ্গীতের হাতে খড়ি তাঁর বাবার কাছ থেকে। মাত্র তিন বছর বয়সে গানের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অধিকার করে নিয়েছিলেন চিরসবুজ এই সঙ্গীত তারকা।
হৈমন্তী শুক্লা ১৯৪৯ সালের আজকের দিনে ২রা ডিসেম্বর উত্তর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।