না-জানি যতনে বোনা কত যে লালিত
কথামালা তব পায়ে হয়েছে দলিত।
তুমি মোর শেষ চিঠি যখন পুড়েছ;
বই খুলে ফুল দুটি বাহির করেছ,
তখন পড়েছে জানি তার কথা মনে,
দিয়েছিল এইসব তোমা যেই জনে।
নদীসম জলে ভরা অলস নয়ন
ধারা হয়ে বয়ে চলা ছিল প্রয়োজন।
যতটা জরুরি ছিল তব ভালোবাসা,
ততটা জরুরি ছিল দুই নায়ে ভাসা।
আর প্রয়োজন ছিল মোরা দুইজন
একসাথে অগণিত বুনিব স্বপন।
কেন জানি এইসব সাজানো স্বপন
দুই পথে মুড়ে যাওয়া ছিল প্রয়োজন।
তোমার আছে কি মনে, চুরি করেছিলে হৃদ্?
চোরানো হৃদয়ভিতে গড়েছিলে মসজিদ।
বলিতে, জপিতে তুমি তসবিতে নাম মোর;
ডরিতে স্মরিতে প্রেমে জায়নামাজের ’পর।
অবশেষে আজ বুঝি, সেসব কথার কথা
বলেছিলে প্রেমে যুঝি, হয়তো ওটাই প্রথা।
এখনো দুজন মোরা সেই দুইজন—
অনুরূপ তুমি-আমি; অবিকল মন।
তবে আমি বনে গেছি পথভ্রষ্ট যাত্রী;
তুমিও লুকিয়ে গেছ; ঘন কালো রাত্রি।
প্রেমে হয়ে প্রতারিত বনেছি নাস্তিক;
এখনো তেমনই আছি, বনিনি আস্তিক।
যদিও চলার পথে পেয়ে গেছি দিক,
তবুও চলেছি বনে হারানো পথিক।
শেষে তব হৃদ্ হতে গিয়ে বের হয়ে
কোথা যেতে চেয়ে কোথা এসে গেছি বয়ে।
হারিয়ে নিজেকে শেষে এসেছে স্মরণ—
নিজেকে হারানো বড়ো ছিল প্রয়োজন।