অদূরে পাহাড়; রঙের বাহার খেলিছে তাহার ’পর;
নীলাভ সবুজ; মলিন সুরুজ; কুয়াশা বাঁধিছে ঘর।
পাহাড়ের সারি গুনিতে না-পারি; গিয়েছে মিলিয়ে নভে;
পাহাড়ের ছায়ে পাহাড় দাঁড়ায়ে; সবারই নজর লভে।
নিকট অচলে রমণী-আদলে রয়েছে দাঁড়িয়ে একা
একখানি তরু, যার তনু সরু; নারীরূপে তরুরেখা!
এসবে ছাড়িয়ে রয়েছে দাঁড়িয়ে খুলিয়া রমণী চুল;
পাহাড়শিখরে দেখিছে নিজেরে; পাশে ফুটে আছে ফুল।
ঢেউ-খেলা চুল করিছে ব্যাকুল পড়িয়া সোনালি আলো—
এপাশে বাদামি রঙেরে প্রণামি; ওপাশে তিমির কালো।
কবির চরণে চুলের বরণে রচা ‘বিদিশার নিশা’
তারাধাঁর কেশে মেদুর আবেশে যেন পেয়ে গেছে দিশা!
ক্ষণিকের তরে আঁখি বন্ধ্ করে হৃদয়ে পুরিতে সুখ,
দূর দিকপানে পাহাড়ের শানে ফিরিয়া লইয়া মুখ
তুলিলে দারুণ, যা দেখে অরুণ নিজেই জ্বলিবে খোদ,
একখানি ছবি, যাহা দেখে কবি হারাবে আপন বোধ—
যেরূপ ছবিতে নজরে চকিতে ভরিয়া যাইবে আঁখি;
রহিবে ভুলিয়া নয়ন খুলিয়া তাবৎ ধরণি বাকি!
চিত্রাধার: কার্শিয়ং, দার্জিলিং, ভারত।